চিল একটা পাখি , মানুষের কান নাকি তার খুব পছন্দ।এই কারনে অনেকেই কান হারালে কোন কিছু না ভেবেই চিলের পেছনে ছুটতে থাকে ।মানুষের এই রকম অনেক অভ্যাস ও চেতনার জন্য সমস্যার সমাধানতো হয়ই না, উল্টো আরো সমস্য বেশি হয় । এই যেমন দেশে প্রতি বছর ৪০ হাজার মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে এবং প্রায় ২ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত ।দেশে ক্যান্সার রোগী আছেন প্রায় ১৫ লাখ, প্রতিবছর মারা যান দেড় লাখ ।বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় ৭০ লক্ষ বলে বলছে ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশন।
কিন্তু যারা আক্রান্ত তাদের অনেকেই জানেন না যে তাদের ডায়াবেটিস রয়েছে। হৃদরোগের কারণে মৃত্যু মোট মৃত্যুর ১৪.৩১ শতাংশ । এই রকম আরো নানান অসুখ বিসুখে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ আজ দিশেহারা ।রোগের চিকিৎসার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে, ব্যাবসাও হচ্ছে । গবেষনা করে জানা যাচ্ছে এই সকল রোগের মুল কারন নাকি প্রকৃতিকে নষ্ট করা কিম্বা প্রকৃতিক জীবনা যাপন ছেড়ে মাততিরিক্ত কৃত্রিমতায় মগ্ন হওয়ার ফল । তার পরেও আমরা চিলের পিছনেই ছুটছি ।প্রকৃতিতে কিম্বা প্রকৃতিক জীবনে ফিরতে চাচ্ছিনা । এক সময় মানুষের যে পরিমান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ছিল অপ্রয়োজনে ঔষধ গ্রহন করার ফলে সেটিও গেছে কমে ।আমাদের খাদ্যাভাসে পরিবর্তন হয়েছে ,মুখোরচক খাদ্য হিসাবে জনপ্রিয় হয়েছে ফাষ্ট ফুড় । টাটকা তাজা ফলমুল সবুজ শাক শব্জি পাওয়া আজকাল মুসকিল । পেলেও তাতে নানান রকমের ভেজাল । তাড়াতাড়ি ও বেশি বেশি পাবার আশায় আমরা হাইব্রিডে ভর করেছি । দেশি প্রজাতির মাছ, হাঁস ,মুরগি, গরু, ছাগল, শস্য শাকশব্জি প্রায় হারিয়ে গিয়েছে ।বিশ্ব অর্থনীতির ৪০ শতাংশ এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চাহিদার ৮০ শতাংশ আসে জৈবসম্পদ থেকে। জীববৈচিত্র্য টেকসই উন্নয়ন ও মানবকল্যাণের জন্য অপরিহার্য।পৃথিবীর সেই জীববৈচিত্র আমারা ধ্বংশের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছি । আই ইউ সি এন এর রেড লিষ্টে ৩১০০০ প্রজাতি বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে যা সমস্ত গাছপালা ছত্রাক প্রানীর ২৭% ।বন ও বন্যপ্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হলে পরিবেশ, প্রতিবেশব্যবস্থা, জীববৈচিত্র্যের ওপর নেমে আসে বিপর্যয় এটা অনেকেরই জানা । কিন্তু সেই জীববৈচিত্র সংরক্ষনে কার্যতো তেমন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি । এখনো কিছু মানুষের শখের জন্য প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ বন্যপ্রানীকে হত্যা করা হচ্ছে ।জীববৈচিত্রের বড় একটি অংশ কিট পতঙ্গ ,ক্ষুদ্রতি ক্ষুদ্র প্রানী যারা নিরবে মাটি বায়ু তথা পৃথিবীর স্বাস্থ ঠিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছে তারাও আজ বিপন্নে তালিকায় ।মোট কথা জীববৈচিত্রের স্বাস্থ আজ বেজায় খারাপ । আর এই খারাপ স্বাস্থের জীববৈচিত্রের মধ্যে থেকে জীববৈচিত্রের একটা সদস্য হয়ে আমরা ভালো থাকতে পারছিনা । সম্ভব ও নয় । বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষতা দিয়ে প্রকৃতিকে বশে আনা সম্ভব হয়নি। উল্ট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রকৃতিকে বৈরী করে তুলছে।

No responses yet